শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৩১ পূর্বাহ্ন

টাকা চাই না,যাকে দেহ ও মন দিয়েছি তাকে চিরদিনের জন্য পেতে চাই

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:
বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়ীতে একদিন এক রাত কাটানোর পর বিয়ে না দিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকায় মিমাংসা করলেন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ।
জানা গেছে,ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে মাদরাসা পড়ুয়া জেডিসির ছাত্রী ও দাখিল শ্রেণির ছাত্রের দীর্ঘদিনের প্রেম চলছিল। প্রেমিক ইতোমধ্যে কয়েকদিন ফোন রিসিভ না করায় প্রেমিকের বাড়ীতে বিয়ের দাবি নিয়ে অবস্থান করে প্রেমিকা। এক দিন এক রাত অবস্থান কর্মসূচীর পার হলেও বিয়ের কোন অগ্রগতি হয়নি। পরে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করে মেয়েকে বাবার বাড়ী পাঠিয়ে দেয় । মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করা হলেও টাকার সিংহভাগই মীমাংসাকারী আওয়ামীলীগ নেতা, ইউপি সদস্য ও স্থানীয় থানা পুলিশের পকেটে গেছে বলে অভিযোগ ছাত্রীর বাবার।

ওই ছাত্রীর বাবা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের সনগাঁও গ্রামের আলম জানান, আমাকে দুওসুও ইউনিয়নের ওয়ার্ড আ.লীগ নেতা আজাহারুল ইসলাম, বর্তমান ইউপি সদস্য রাশেদুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক ইউপি সদস্য আশরাফুল হক এক লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে মেয়েকে বাসায় রেখে গেছে।

ঘটনার কথা জানতে চাইলে ছাত্রী জানায়, আমার বাবা টাকা নিতে পারে। কিন্তু আমি টাকা চাই না যাকে দেহ ও মন দিয়েছি তাকে চিরদিনের জন্য স্বামী হিসেবে পেতে চাই। একই মাদরাসায় পড়–য়া ছাত্র দুওসুও ইউনিয়নের ফটিয়াপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে শামীমের সাথে দু বছর ধরে প্রেম তার।সে আরও জানায় মোবাইলে কথা বলাসহ বেশ কয়েকবার শারীরিক মেলামেশাও হয়। কিন্তু দুদিন ধরে কোন যোগাযোগ করছিল না ওই ছাত্র।

দুওসুও ইউনিয়ন আ.লীগের ৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি আজহারুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ৫ লক্ষ টাকায় বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। মেয়ের বাবাকে ১ লক্ষ ষাট হাজার টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা কি হলো এমন প্রশ্ন করলে ফোন কেটে দেয় ওই আ.লীগ নেতা।

সাবেক ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি মীমাংসার সময় ছিলাম না।

বর্তমান ইউপি সদস্য রাসেদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ছেলে মেয়ে দুজনে নাবালক, বিয়ের বয়স হয়নি তাদের। বালিয়াডাঙ্গী থানার তদন্ত অফিসার মিজানুর রহমানকে বিষয়টি জানালে, তিনি বিষয়টি স্থানীয় মীমাংসা করে নেওয়ার কথা বলেন। এ জন্য টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।

মাদরাসা ছাত্রের বাবা শহিদুর রহমান মুঠোফোনে জানান, উভয় পক্ষের লোকজন বিষয়টি ৩শ টাকা নন-জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে লিখিত ভাবে মীমাংসা করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে আর কোন কথা বলবেন তিনি বলে ফোন কেটে দেন।

দুওসুও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য মশিউর রহমান আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। সাবেক ইউপি সদস্য ও আ.লীগ নেতারা মিলে বিষয়টি আপোষ মীমাংসা করে দিয়েছে বলে শুনেছি।

বালিয়াডাঙ্গী থানা তদন্ত অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার কথা শুনে স্থানীয় ইউপি মেম্বারকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। কিন্তু বিষয়টি তার আগেই মীমাংসা হয়ে গেছে বলে জানায় তারা। তবে মেয়ের বাবা অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com